December 24, 2024, 3:02 am

রেলে পণ্য যাবে নেপালে মাঝে ট্রানজিট দিবে ভারত

নিজেস্ব প্রতিবেদক।
  • Update Time : Monday, February 8, 2021,
  • 320 Time View

বিবিআইএন সংযোগ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার অগ্রগতি হিসাবে ভারতের রোহনপুর-সিঙ্গাবাদ রেলপথ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে নেপালে সার রপ্তানিতে ট্রানজিট সুবিধা প্রদান করছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। নেপালের সাথে রপ্তানি ও স্থলপথে বাণিজ্যের জন্য ভারত একচেটিয়াভাবে বাংলাদেশকে ট্রানজিট সুবিধা সরবরাহ করে আসছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় হাই কমিশন ।

বিবিআইএন কি

বিবিআইএন বা ‘‌বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল সংযুক্তি’ হল সার্ক ভুক্ত চারটি দেশ নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি পরিকাঠামো, যেটির উদ্দেশ্য জলের উৎসের সঠিক ব্যবহার এবং বিদ্যুৎ, সড়কের পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।বিবিআইএন ভূমি বেষ্টিত (ল্যান্ড ব্লক) দেশ নেপাল ও ভুটান ভারত এর কলকাতা বন্দর,হলদিয়া বন্দর এবং বাংলাদেশ এর চট্টগ্রাম বন্দর,মাংলা বন্দর ব্যবহারের বিশেষ সুবিধা পাবে।

১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ট্রানজিট ও প্রটোকল চুক্তি হয়। এই চুক্তির আওতায় নেপালকে ৬টি পোর্ট অব কল দেওয়া হয়। এগুলো হলো চট্টগ্রাম বন্দর, মোংলা বন্দর, বেনাপোল, বাংলাবান্ধা, বিরল ও চিলাহাটি। এসব পোর্ট অব কলে নেপালের যানবাহন পণ্য পরিবহন করতে পারে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাবান্ধা ছাড়া আর কোনো বন্দর দিয়ে নেপালে নিয়মিত পণ্য আসা-যাওয়া করে না। বর্তমানে ভারতের এই উদ্যাগের ফলে অন্যান্যা দেশ থেকে নেপালের আমদানি পণ্যসমুহ ভারতীয় অঞ্চলের মধ্য দিয়ে ট্রাফিক ইন ট্রানজিট হিসাবে পরিবহন করা হবে। নেপালের সাথে রপ্তানি ও স্থল বাণিজ্যর জন্য ভারত বিশেষভাবে বাংলাদেশকে ট্রানজিট সুবিধা সরবরাহ করবে ।

রেলপথ ট্রানজিট ইন ট্রানজিট মুলত দুটি ভারত-বাংলাদেশ ক্রসিং পয়েন্ট রহনপুর(বাংলাদেশ)- সিঙ্গাবাদ (বাংলাদেশ) এবং বিরল (বাংলাদেশ)- রাধিকাপপুর(ভারত ) রেলপথ হয়ে পরিবহন হয়।

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ  আমদানি সার নেপালে পাটানো হয়। এ বছরের ৩ ফ্রেবুয়ারি বাংলাদেশ রেলওয়ে নেপালে  রপ্তানি সার বোঝাই  প্রথম ট্রেনটি ভারতীয় রেলওয়ের নিকট হস্তান্তর করে। বর্তমানে রেলওয়ে ট্রানজিট ব্যবহার করে প্রায় ২৭ হাজার মেট্রিক টন সার নেপালে রপ্তানি করা হবে।

নেপালের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য এখন বাংলাদেশের অনুকূলে। এর মানে, বাংলাদেশ থেকে বেশি অর্থের পণ্য রপ্তানি হয়, নেপাল থেকে কম পণ্য আমদানি হয়। ছয় বছর আগেও নেপালের অনুকূলে ছিল ব্যবসা-বাণিজ্য। ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে এই পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়ায়। ওই বছর আড়াই কোটি ডলারের পণ্য বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে। আর আমদানি হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ ডলারের পণ্য। এরপর এই বাণিজ্যের পরিমাণ শুধু বেড়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আর নেপাল থেকে আনা হয়েছে প্রায় এক কোটি ডলারের পণ্য।

এক দশক ধরেই পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপাল, ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে ট্রানজিট সুবিধা নিয়ে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগতলায় একাধিক চালান নেওয়া হয়েছে। কলকাতা থেকে নৌপথে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ পর্যন্ত; এরপর সড়কপথে আখাউড়া হয়ে আগরতলায় পণ্য গেছে। সম্প্রতি কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত পণ্য এনে তা সড়কপথে আগরতলায় নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভুটান থেকে পণ্য বাংলাদেশে আসছে।

জানা গেছে ,আগামীতে নেপালে আরও ২৫ হাজার মেট্রিক টন সার রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। এই পদক্ষেপগুলি আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলির অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।

বাংলাদেশের কতটা লাভ

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ছাড়াও বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে নেপালের পণ্য তৃতীয় দেশে গেলে বা তৃতীয় দেশ থেকে আমদানি করলে তাতে বাংলাদেশ লাভবান হবে। পায়রা ও মংলা বন্দর মূলত নেপালকেই ব্যবহারের জন্যই দেয়া হবে। ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। রেলে পণ্য এনে বন্দরের মাধ্যমে অন্য দেশে গেলে বাংলাদেশেরই সুবিধা। আবার একই সাথে রেলপথেও রাজস্ব বাড়বে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71